স্মৃতিময় রাত

বৃষ্টি ও প্রেম (সেপ্টেম্বর ২০২০)

obaidul haque suhan
  • ৫৭
যেই মানুষটির সাথে প্রতিদিন দেখা হতো। সেই মানুষটিকে শেষ কবে দেখেছিলাম, দিন তারিখ বছর কিছুই মনে নেই। তবে মনে আছে, কাচা বাজার নিয়ে ফিরছিলাম। তুমি অচিনা এক ছেলের সাথে রিস্কাতে যাচ্ছিলে। আমাকে দেখে চমকে উঠলে, হইতো খুব বেশি লজ্জা পেয়েছিলে। সেটাই ছিল শেষ দেখা।

কত বাহানা ছিল দেখা করার। কত শত বার স্কুল পালিয়েছি তার হিসেব কি তুমি আমি রেখেছি। তোমার স্কুলের গেটের বাহিরে ঝাল মুড়ির দোকান। ঝাল মুড়ি খাওয়ার বাহানায় তোমার ক্লাসের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। তোমার বান্ধবীরা সেটা নিয়ে হাসি ঠাট্টা করত। আমিও বেশি সময় সেই দু তলাতে তাকিয়ে থাকতে পারতাম না কেউ দেখে ফেলবে, কি মনে করবে এইসব ভেবে। যদিও এখন সেই ভেবে কষ্ট হচ্ছে, কি এমন হতো আরো কিছু প্রহর তাকিয়ে থাকলে।

চাদ রাতের কথা মনে আছে কি তোমার। সারা রাত একটু পর পর কল দিয়ে বলতে আমি এই করছি সেই করছি। এখন কেউ এমন করে বলে না জানো, নামায শেষে মোবাইলে এত গুলো ছবি দিয়ে কেউ বলে না এখন তোমার পালা দেও ছবি দেও।

আমার বাসার সামনের সেই দোকানের কথা কি মনে আছে তোমার। হাহা বড্ড বেশি হাসি পাচ্ছে এখন! তোমার সাথে আমার চিঠির প্রেমও ছিল। কতই না বাহানা ছিল কেউ পড়ে ফেলবে সেই ভেবে। তুমি স্কুলে যাবার সময় রেখে যেতে দোকানের মামার কাছে। কোথায় দেখা করবে, কখন দেখা করবে, আমাকে কত বার মনে করেছো, আরো কতকি লেখা থাকতো। আমি ঘুম থেকে উঠে মামার দোকানের পিছনে সিগারেটে খেতে খেতে তোমার চিঠি পড়তাম।

তোমার ধারণা ছিল আমি মহাপুরুষ। গত কিছুদিন আগে নদী বললো আমি মহাপুরুষ তখন বড্ড বেশি হেসেছিলাম। তোমার কথা এখন মনে হয় না। কিন্তু সেইদিন খুব মনে পরেছিল। কত বার তোমার আম্মুর সামনে তোমার হাত ধরেছি। সেই সাহস হইতো আর কোনো প্রেমিক অর্জন করতে পারবে না। কিন্তু এইটা সত্য প্রথম অবস্থায় তোমার আম্মুর সামনে ভয় লাগতো খুব, ঐযে বাজার রাস্তায় তোমার আম্মুর সামনে পড়েছিলাম। সেইটা ছিল তোমার মা আমাদের সম্পর্ক জানার পর প্রথম সামনে পড়া। তুমি তোমার আম্মুর পিছনে দাড়িয়ে হাসছিলে। তখন ইচ্ছা করেছিল গলা চেপে দেই। আর তুমি একটি জিনিষ লক্ষ্য করনি আমার পা সেই বেলায় খুব কেপেছিল আর এত ভয় পেয়েছিলাম যে বলে বোঝাতে পারবো না। আন্টি আমাকে খুব ভাল করেই চিন্ত, তার সাথে কত কথা হয়েছে রাস্তায় হটাৎ দেখাই। কিন্তু সেই বেলা আমার নাম ধরেও ডাক দেয়নি তাই হইতো এত ভয় লেগেছিল।

আন্টির সাথে প্রথম পরিচয় হয় আন্টি যেইদিন প্রথম এই গ্রামে আসে। আমি গলি ধরে হেঁটে যাচ্ছি। ট্রাক থেকে মাল নামাচ্ছিল আর আন্টি দাড়িয়ে দেখছে আমাকে দেখেই বললো এখানে মোবাইল রিচার্জ কোথায় আছে আশে পাশে? উত্তরে আমি বললাম এইতো সামনে! আমাকে নাম্বার দেন পাঠিয়ে দিচ্ছি। আন্টি নাম্বার দিবে কি দিবে না ভেবে নাম্বার দিল টাকাও আমি পাঠিয়ে দিয়েছিলাম ঠিক কিন্তু জানা হইনি টাকা গিয়েছিল কি না। সেই প্রসঙ্গ আর কোনোদিন উঠেনি।

তোমাকে প্রথম দেখি নিশির বাসার সামনে। আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম আমার এক বন্ধুর বেলাল তার জন্য সে আসলে আমি এখানে দাড়িয়েই রইলাম। বেলাল অনেক কথা শুনিয়ে সেও দাড়িয়েছিল। প্রায় ১ ঘন্টা গেলেও তার দেখা না পেয়ে বাড়ির সীমানার দেওয়ালে উঠে দেখি তুমি দড়ি লাফ দিচ্ছ। নিশি আর সাথে 3 4 টা মেয়ে সংখ্যা গণে যাচ্ছে। বেলাল আমায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল নিশিদের বাড়ীর ভেতর আর তোমাদের হাসি। আমি অন্যকিছু না বলেই তোমার নাম জিজ্ঞেস করলে তোমার হাসি থেমে যাই। কেমন এক অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলে আমার দিকে। নিশি আমাকে আগে থেকেই পছন্দ করতো না তার বয়ফ্রেন্ডের ঝামেলা করেছিলাম। আর সে তোমার কাছে আমার নামে এক পাহাড় অভদ্রতা তুলে ধরেছিল।

আমি তোমাকে খোঁজে চলেছি রাতে দিনে রাস্তায় মাঠে। সেই কষ্ট বেলাল সহ্য করতে না পেরে সব ঠিকানা দিয়ে দেই আমাকে।তুমি এখান থেকে গ্রামের দিক একটি স্কুলে পড় যেই কারণে সকাল সকাল চলে যাও তোমার আম্মুর চাকরীর জন্য এখানে আসতে হয়েছে বছরের শেষ সময় তাই স্কুল টান্সফার করবা না পরীক্ষা দিয়েই এখানের স্কুলে ভর্তি হবে। সেই সকালে ঘুম থেকে উঠে সেই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে রইলাম। মাথা নিচু করে হেঁটে যাচ্ছে একটি মেয়ে আমি তোমার পিছু পিছু হেঁটেছি একটি বারের জন্য পিছু ফিরে তাকালো না।

সেইদিন সন্ধ্যাতেই তোমাকে দেখি কামাল স্যারের বাসায় প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছ। আমি দেখেই বিজয় আর বেলাল কে কল দিলাম। তারা আসলে মিটিং বসে এখন পরবর্তি পদক্ষেপ কি হবে। তার পর বুদ্ধিশুদ্ধি বের করা হল। আমরা এখানে পাইভেট পড়বো।

স্যার আমাদের রাতে পড়তে দিবে না। আমরা এসএসসি পরীক্ষার্থী হওয়ার পরেও বলেছি নবম শ্রেণীতে পড়ি তবুও আমাদের সুযোগ হল না। আমরা বিকালের শিফটে পড়তে শুরু করি প্রথম কাজ হল স্যারের মন জয় করে রাতের শিফটে পড়া। সেই কষ্ট বেশিদিন করতে হল না।
এর আগে আমরা চলে আসার সময় দেখা হত তাদের সাথে আমরা চলে আসতাম তারা যেত মাঝ পথে যা দেখা আর কি। তবে যেইদিন প্রথম রাতের শিফটে যাই সেইদিন আমাকে দেখে এমন বড় ঘোমটা দিয়ে বসে রইল।

রাতে শিক্ষার্থী বলতে আমি বেলাল আর ওরা দুইজন মেয়ে আর 5 টা ছেলে। এর মাঝে সবাই আমকে ভয় পেত প্রথম অবস্তায় তারা জানতো না আমি রাহার জন্য প্রাইভেট এ এসেছি। যখন জানতে পারে তখন স্যারকে বলে দেই স্যার ওরা এসএসসি দিবে। সেই জেনেও স্যার আমাদের পড়তে দিল।



আচ্ছা সেইদিনের কথা মনে আছে কি তোমার!!
পায়ে পায়ে টুকাটুকি, তুমি ইচ্ছে করেই দিতে আর বলতে ভাইয়া সরি। তার পর ভাই ডাকতে নিষেধ করেছি বলে বাবা ডাকা শুরু করলা তোমার বান্ধবীর আঙ্কেল তোমার বাবা।

হটাৎ বিদ্যুৎ চলে গেল। তোমার পায়ে টুকটুকির পরিমান আরো বেড়ে গেল। আমি অন্ধকারে তোমার কান থেকে তাড়াহুড়া করে তোমার দুল খুলে আনলাম। খুলতে গিয়ে তোমাকে ব্যথা ও দিয়েছিলাম। যখন স্যার মোমবাতি নিয়ে আসলো কিছুই বললে না কে নিয়েছে বাহ্ কে এমন করলো এইটাও জানতে চাইলে না। আমাকে অনেক প্রশ্রয় দিয়েছ। আর যেইরাতে তোমার আম্মু আসতো না সেইদিন তুমি আমার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতা তোমাকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। যদিও শেষ সময়ে সেই রাতের চাকরি আমার হয়েছিল।


সেই গলিতে অনেক সময় যাওয়া হয় না। ঐযে সেই বাসার ছাদটি এখন নেই, সেখানে আবার বাসা হয়েছে। ছেলেদের মেস টাও নেই।যেই মেসে জামেলা করেছিলাম। তোমার দিকে তাকিয়ে কি বলেছিল বলে ছেলেদের মারতে গিয়েছিলাম। বেলাল না থাকলে সেইদিন ওই ছেলেগোলোর অবস্থা কি যে হতো। তারাতো পর তোমাকে ভাবী ডাকা শুরু করলো।

সেই ছাদে কত তোমার হাতে হাত রেখে বসেছি। সেই কোরবানি ঈদের কথা মনে আছে সবাই যখন ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছে শহর একদম ফাঁকা হচ্ছে তখন তোমার আম্মুর অফিসে জামেলা হলো থাকতে হবে আরো কিছুদিন। তখন সেই প্রথম তোমার শরীলের গন্ধ নিয়েছিলাম। তোমার চুল সরিয়ে গলায় নাক ডুবিয়ে দিয়েছিলাম সেই বিল্ডিঙের চিলে কোঠায়। সেই চিলেকোঠাও নেই আছে স্মৃতি স্মৃতি স্মৃতি।

তোমার বাসায় যাওয়ার কথা পুরোপুরি ভুলে ফেলেছিলাম। আর দেওয়াল টপকে তোমার রুমের সেই জানালা খুলে তোমার আমার ঠোঁটে ন্যাচারাল থেরাপী হতো সেই কথাও ভুলে গিয়েছি । এইসবে তখন আমি ছিলাম কাচা তুমি ছিলে পাকা। প্রথম তুমি দিয়েছিলে, ঐযে বেলাল এর সাথে ওই গলিতে আসতেই তুমি স্পাইডার এর মত এসে ঠোটে লাগিয়ে চলে গেলে আমি এক মিনিট থুম হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। তার পর তুমি ভয় এ আমার সামনে আসনি তিনদিন। তখন তোমার মোবাইল হয় আর কথা হত ১২ টাকায় ৪০ মিনিট। সারাদিনে কতবার টাকা রিচার্জ করতে হতো তার হিসেব নিকেষ কে করতো। কিন্তু তখনোও আমার সেই চিঠি আদান প্রদান বন্ধ হয়নি। জানো কিছুই নেই এখন এই শহরে আগের মত। এইদিকে মামার দোকান তো তুমি থাকতেই শেষ।

আমার আম্মু তোমাকে কেনো দেখতে পারতো না কে জানে। নাকি আমার রুমের জানালার কাছে চিঠি নিয়ে ধরা খেয়েছিলে বলে। লিপস্টিক ঠোঁটে দিয়ে চিঠি তে কিস করে সেই চিঠি আমাকে না দিয়ে আম্মুর হাতে ধরা খেয়ে আম্মুরে দিয়েছিলে। কি একটা বোকা ছিলে ভাবো একবার সেই চিঠি আম্মু পড়ে আমার রুমে ফিকে মেরেছিল। আমি ভয় পেয়ে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। সেইদিন দেখাতে কি হাসাহাসি তুমি একটু পর পর গার সোজা করে বলছিলে আমি কি পারি না, শাশুমা আমাকে কি করবে আমিও কম না। সেই বুক ফুলানো আমার চোখে ভেসে উৎলো। সব থেকে মজার ব্যাপার ঘটলো তার পরের দিন। তুমি আমার বাসার সামনে দিয়ে আসার ক্ষমতা হারিয়ে ফেললে। স্কুলে যেতে হতো তোমাকে এক কিলো রাস্তা ঘুরে তবুও আমার বাসার সামনে দিয়ে যেতে না। অবাক না সব কিছু।
রহিমগঞ্জের পার্কে যাওয়ার বাইনার কথা মনে আছে। কত শত বার বলেছ একদিন শুধু একটিদিন নিয়ে যেতে। শেষে তুমি টাকা বের করলে। দিন তারিখ কিছুই মনে নেই আমার। আমি সিএনজি ভাড়া করলাম রহিম উদ্দিনের। সেই সালা ছিল আমার এবং আমার ফ্যামিলির চিনা, যদিও কেউরে কিছু বলেনি তুবো একলা পেলে মানসিক নির্যাতন করতো সালায়, অবাক করা বিষয় এইতো সেইদিনের কথা এইগুলা কিন্তু সেও ভুলে গিয়েছে।

সেই মামার দোকানের সিগারেটের বিলের ব্যপারটা। তোমাকে কল দিলেই এক প্যাকেট সিগারেট হাতে আসতো। আগে কল দিতে হতো না তোমার কথা বলে বাকি করতাম দিন শেষে তুমি বিল দিয়ে দিতে। মামা দুজনের বাকি এক সাথে লেখত আমি একবার সেই বাকি দিয়েছিলাম মনে হই 1700 টাকা হয়েছিল। আর বাকি সব সময় তুমি দিতে। জানো এখন না সিগারেট এর বিল দিয়ার জন্যও হলেও তোমাকে চাই।

তোমাকে বহুবার মেরেছি, মাইর খাওয়ার পরও বুকের পাঁজরের হাড়ের কাছে চলে আসতে। চোখের পানি শাটের টি-শার্টে মাখা মাখি হতো। শেষ মেরেছিলাম সম্ভত সুইসাইড করার কারণে। যদিও তুমি ব্যর্থ ছিলে মৃত্যু তোমাকে ছুঁতে পারেনি। তারপরও তিনদিন টানা আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছিলে, বাড়িতে ফিরে দেখা করেছিলে। সেইদিন তোমার মা কল দিয়ে বলেছিল তোমাকে বোঝাতে আমি তোমাকে খুব জোরে জোরে থাপ্পড় লাগিয়েছিলাম। কত গোলা তুমি হিসাব করলে পারতে আজ এখানে লেখা যেত। প্রেম টা ছিল আমাদের ভয়ানোক খুব ভয়ানোক আমি চলে গেলাম নেশার জগতে তুমি চলে গেলা একাকীত্বতে। সারাদিন নেশা করে নেশায় মগ্ন তোমার কল দরতাম না তোমার মা যখন কল দিত আমি বলতাম আমার পড়াশোনা আছে শেষ করে কল দিবো আপনার মেয়েকে। সেই পড়াশোনা আর শেষ হয় নাই আমিও কল দেইনি
তোমার ভাইয়ার কি করেছিল মনে আছে। সে অনেক সাহসী অনেক শক্তিশালী শালাই আমার সামনে এসে মুরগি। তোমার স্কুলের শহীদ মিনারে আমি বসে আছি। তোমার ভাই আসলো এসে দেখে আমার মুখে সিগারেট সে ওপেনলি সিগারেট খাওয়া দেখেই অবাক আর কি বলবে শেষ আমার বাসায় নিয়ে তোমার আমার ছবি দেখিয়ে বিদায় দিলাম। ঐযে যখন দরজা লাগালাম রুমের তোমার ভাই কাপতেছিল। আমি আর হাসতে পারছি না।

মা কি তার মেয়ের প্রেমিকের কাছে কল দিয়ে বলবে বাবা আমার মেয়ে সারাদিন খাইনি তুমি ওরে খেতে বলো সে খাবে।
আমার মেয়েটা না বাবা শেষ তাকে একটু বোঝাও।
তোমার মায়ের চোখের পানি, আর বাবা ডাকা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়েছে। সেইদিন প্রায় বছর তিন বছর পর কল দিয়েছিলাম নাম্বারটা হইতো সেভ ছিল তোমার আম্মুর মোবাইলে। রিসিভ করল, আমি হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম তিনি কথা বললো না। বললাম আপনি কে নাম্বার টা নামবিহীন সেভ করা আমার মোবাইলে। এই কথা বলতেই তিনি দীর্ঘশ্বাসে মোবাইল রেখে দিল।

আমি আশা করেছিলাম কি জানো, আমাকে বলবে আমি তোমার মা গো তোমার সেই মা, ঐযে অভিমান রাগ হলেই যার বাসায় টিল ছুড়ে মারতে আমি তোমার সেই মা। শত রাগ অভিমানে সব বলতে যাকে, রাগারাগি করে বলতে এই করবো, সেই করবো, মেরে ফেলবো, আপনার মেয়ের জন্য। সেই মা সেই মা চিনেছ বাবা , আমাকে চিনেছ একদিন আসো এসে তোমার ছোট বোনকে দেখেযাও সেও তোমার প্রথম প্রেমিকার মত বড় হয়ে গেছে কিন্তু তার মত চঞ্চল না।

""জিবনে অনেক মা পেয়েছি অনেক মা এখনো বাবা ডাকে, কত নারী আমাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলেছে এইটা আমার সন্তান আমার ছেলে সেই ভালবাসা তো আমার প্যাপ ছিল না।তাও কেনো এত গভীর ভালবাসা। আমি সেই ভালবাসা রাখতে পারিনি, এখনো পারিনা আমি তাদের ভালবাসার যোগ্য নয়। তবে কেনো এই গভীর ভালোবাসা। তাহলে কি পৃথিবীর সব অযোগ্য মানুষকে মানুষ ভালোবাসে বেশি""
আন্টি সরি, সেদিনও মিথ্যা বলেছিলাম আপনার সাথে আমি আপনার নাম্বারটা এখনো সেভ করা আপনার মেয়ের খোঁজ নিতেই কল দিয়েছিলাম। কিন্তু আত্মসম্মানে লেগেছিল তাই মা বলে ডাক দেইনি।

প্রেম কিভাবে বিষাক্ত হয়ে যায় সেটার প্রমাণ এই প্রেম কাহিনী। তুমি গান গাইতে। তোমার রাতের প্রোগ্রাম পড়তো আমি নিয়ে আসতাম তুমি সবুজ শাড়ি জড়িয়ে নিতে নাহলে সাদা। সেই রাতে তুমি আমি হেঁটেছি কত। নির্জন রাস্তায়, জোসনা ভরা রাস্তা, মাঠ নদী তবুও সেই সময়গুলো অশ্রিল হতো না অশ্রিল হতো সেই সাড়ে তিনটায় অফিস ছুটির আগ মুহূর্তে তোমার জানলায়। তবু এত সুযোগ পেয়েও কোনো দিন এত গবিরে যায়নি আমাদের প্রেম। আমার হাত একবার গিয়েছিল তোমার বুকের উপর তুমি ঠায় দিয়েছিলে আমি ফিরিয়ে নিয়েছিলাম আজও সেই অপূর্ণতা বহন করে চলি। কিন্তু হাত যেত তোমার মাথার পিছনে কত বার তোমার ঠোটের স্পর্শ পেয়ে শিহরিত হয়েছি সেই হিসাব করা যাবে না। আমাদের অশ্লীলতা ছিল এই ঠোটে ঠোঁট, আমার কাক তোমার গলায়, আর পায়ে ঠোকাঠুকি। তুমি মাঝে মাঝে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে! সেই কি অশ্লীলতা! জানি না। সবাই হারিয়ে গিয়েছে। তোমার সে একাকীত্বতা এখন আমি বহন করি। কি নির্মম, কি বিশ্রী ভয়ানক এই একাকীত্বতা।

আমাদের ব্রেকআপ এর মূল কারণ ছিল, আমার ফ্যামেলি, তুমি না জানিয়ে ফেসবুক খোলা, রাতে অন্য ছেলের সাথে কথা বলে আমার নামে চালিয়ে দিয়া, বিষাক্ত সেই নারী যার কল্পনা শক্তি ছিল বাস্তব থেকে ও বাস্তব, আর শেষ পযন্ত আমার সুইসাইড চিন্তা করা।

তবুও সব ঠিক হতো হইতো, তুমি তোমার দুর্বলতা কাটিয়ে উঠে ছিলে খুব তাড়াতাড়ি, আমি যখন নেশায় তখন তুমি অন্য কোথাও প্রকাশ করছো তোমার প্রেম। তোমার মা আমাকে কল দিয়ে বলেছিল , আমি নাকি রাতে তোমার সাথে কথা বলি অবাক করা বিষয় তখন সেই কিছুদিন আমি মোবাইল ছুয়ে দেখিনি। ছিলাম নেশায়। কথা কি বলবো খাবার কথা ভুলে গিয়ে সেই বন্ধুর বাসায় পরে ছিলাম 4 5 দিন। তোমার মা বললো আমি রাতে এত কি কথা বলি। আমি বললাম ছিল কিছু কথা আর বলবো না। তোমার মা বললো নেও কথা বলো তার সাথে ফোন হাতে নিয়ে সেই হাসি গোলা টা শুনতে ইচ্ছা করছে এখন খুব ইচ্ছে করছে, খুব ইচ্ছে করছে। তোমার সেই হাসি মুখে কেমন আছো। সেইদিন আমিও হেসেছিলাম এই ভেবে তুমি আমার থেকে তোমাকে দূরে সরিয়ে নিয়ে এসেছ। আর আমিও সেই বিষাক্ত নাগিনীর কাছে যেতে পারবো সেই ভেবে। তারপর বললাম রাতে কথা বলোনা , ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করো যা করবে ভেবে চিন্তে পাগলামি করো না। তুমি বললে, ভালবাসি । আমি বললাম শুনেছি এই বলে বললে আমি একটি ছেলের সাথে কথা বলি তুমি শুনেছ বোকা দিবে না। বলেছিলাম প্রয়োজন মনে করছি না!
তুমি যদি মনে কর ভুল তাহলে ভুল, যদি মনে করো ঠিক তাহলে ঠিক।


সেইদিন রাতেই বাসায় অনেক কথা কাটাকাটি হল। বাসা থেকে রাত 1 টায় বের হলাম এক প্যাকেট কমদামী সিগারেট হাতে নিয়ে। হেঁটেছিলাম সারারাত শেষ পর্যন্ত আমার ঠায় হল বাগান বাড়ি সাল ২০১৫। সেই বাগান বাড়িতে কেউ থাকতো না। ঘরের বিতর নেটওয়ার্ক থাকতো না। কথা বলতে হতো ছাদে উঠে। যতখন কথা বলতাম সময় কথা বলতাম সেই বিষাক্ত নাগিনীর সাথে কথা বলা হতো। আর সেই অন্ধকার জগত নেশায় মেতে থাকতো এই শরীল দেহ। আর্ধ মাসে আমার ৪৮ হাজার টাকা শেষ হয়েছিল। সেই বাড়িটা ছিল ভৌতিক কেউ থাকতো না কত ভৌতিক কাহিনী ঘটেছে। আমার রাতে ২ প্যাকেট সিগারেট এ হতোনা সেই ছেলে গত ২ বছর সিগারেট খায়না। কি অবাক বিষয়।

দেখো আজ সব পরিবর্তন। তুমি থাকলে হইতো আমাদের সম্পর্কের ৭ বছর পূর্ণ হতো। কি দীর্ঘ সময় তুমি তা হতে দিলে না। আমার ফ্যামেলি তোমার ফ্যামিলির উপর ক্ষেপে বসলো এলাকার সম্মানীয় ব্যক্তির ছেলে বলে আমার নামে কিছুই হলো না, সব দোষ গেলো তোমার উপর তুমি নারী ছিলে বলে হইতো তোমাকে মা** গালি শুনতে হত। আমার সামনে এসে কান্না করতে করতে হেসে ফেলতে। তোমার আম্মুর চাকরিও চলে যাওয়ার অবস্থা।

সেদিন রাতে আমি প্রথম অনেক খারাপ ব্যাবহার করেছিলাম। যেই রাতে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। প্রতিজ্ঞা ছিল তোমার জীবন থেকে সরে যাবো। সব কিছু ঠিক করে দিয়ে। সবই ঠিক হল, কিন্তু আমার তোমাকে ছাড়তে হইনি, তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে।




অধ্য মাস পর দেখা হয় তোমার সাথে। তোমার বিয়ে ঠিক বলেই আমাকে জড়িয়ে দরে মাথায় চুম্মু একেছিলে। আর আন্টি দেখিয়ে বলেছিলে আন্টি পড়িয়ে গিয়েছে কিন্তু বিয়ে হবে না। আমি বলেছিলাম না হলেই ভাল হলেও ভাল। তুমি হাহা হাহা করে হেসে দিলে।

আমার হাতটি শক্ত করে ধরলে। মাথা জাকি দিয়ে চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে বললে আমার সব কথা তোমার থেকে তুলে নিলাম। কিন্তু অজস্রবার তোমাকে ভালোবাসি। তুমি আবার বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললে এই বুকের পাঁজর আমার চিরস্থায়ী নয়। এই পাঁজরে আমার ক্ষণস্থায়ী ভালোবাসা।

তোমার বিয়ে এই কথা আমাকে কেউ বলেনি। গায়ে হলুদের পর্ব শেষ করে তুমি পালিয়ে যাবে এইটা শোনার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। রাত একটায় তোমার মা কল দিয়ে বলেছিল রাহা কি তোমার সাথে। আমার ঘুমের ঘোর দেখে আন্টি আর কিছু বললো না। সেই গল্প শুনি তোমার মুখে পরদিন রাতে তোমার সাথে আমার শেষ কথা। আমায় বললে তুমি বিয়ে করেছো ঠিক কিন্তু সেই ছেলেকে না যেই ছেলের সাথে রাতে কথা বলতে সেই ছেলে। আমি বলেছিলাম আচ্ছা। তুমি বলেছিলে আমাকে চার পাঁচ দিন থাকার ব্যাবস্থা করে দিবে। বলেছিলাম পারবো কিন্তু করবো না। তুমি হেসে বলেছিলে এখনো আমাকে বাস্তবতা শিখাবে। আচ্ছা আমিও দেখি বাস্তবতা কত কঠিন কত নির্মম।
আমি তার কথা ফাইজামি ভেবে উরিয়ে দিয়েছিলাম। মনে করেছিলাম হইতো কোনো বান্ধবীর বাসায় বিয়ের কথা শেষ হলে বাসায় ফিরবে।

কিন্তু ঐযে বাইকে দেখিছিলাম এইটাই সেই রাতের কথা বলা সেই ছেলে। তার পর লোকমুখে সব শোনা হলো। অবাক পৃথিবী অবাক মানুষ কে কখন কার কিভাবে হয় কেউ জানে না। আমার রক্ত কাল তোমার হতে পারে।

কত দিন পর তোমার কথা ভেবে রাত কাটিয়ে দিচ্ছি!
আচ্ছা তুমি ভাল আছো?
তুমি কি একটি বার কল দিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারোনা কেমন আছো?
কত শত দিন গিয়ে হাজারে উন্নীত হয়েছে তবুও সেই চলে যাওয়ার পর ফিরে একটি খোজ দিলে না।
সেই কতকাল তোমার দুচোখে পানি দেখিনা।

এখনো টকটকা লাল গোলাপ বায়না করো।
আচ্ছা তোমার কী বাচ্চা হয়েছে?
নাম কি রেখেছো?
মেয়ে হলে রাজরানী মত সাজিয়ে রাখবে বলেছিলে আমায়। নাকি এখন সংসার, দায়িত্ব নেশায় সব ভুলে গিয়ে মেয়েকে খাওয়াতে ব্যাস্ত থাকো।
এখন হইতো হাজার কাজ করে শাশুড়ির মন রাখতে পারো না।

আমি এমন হতভাগা তোমার বাচ্চা হয়েছে শুনবো কিভাবে তুমি বেঁচে আছো কিনা এইটাই জানি না। বেঁচে থাকলে হইতো এত দিনে খোজ নিতে। তোমার আম্মু ছাড়া কারো নাম্বার খোলা নেই। তোমার আম্মুর কাছে তোমার খোঁজ নিয়া আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ এখন। আর হইতো জানতে পারবো না। যদি কখনো কোনো ট্রেন-লঞ্চ বাস, কিংবা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে তোমার সাথে দেখা হয় লজ্জায় চোখ না ফিরিয়ে আর একবার বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলো এখনো তোমায় ভালোবাসি। সেই যদি হই বৃদ্ধ বয়সে তবুও তুমি জড়িয়ে নিও।


সব কথা ইতি
তোমার স্মৃতি!
বুকে রেখে
ঘুমায় চিরনিদ্রায়!
যদি থাকো বেঁচে
খোঁজ নিও
হঠাৎ ফোনে !
যদি যাও মরে
স্বপ্নে এসে বলিও
নেই আমি পৃথিবীতে
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আহসান আলী ভাল লেগেছে ভাই
ভালো লাগেনি ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ফয়জুল মহী অনুপম লেখা I চটুল ভাষায় হৃদয়ঙ্গম লেখা ।
ভালো লাগেনি ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

একটি অতীত স্মরণ গল্প। ভালবাসা, বিশ্বাস, হৃদয়ের টান ছিন্ন হয়ে অচিনা হয় সেই প্রিয় মানুষ, সেই তুলে ধরার চেষ্টা ছিল। কতটুকু তুলে ধরতে পেরেছি জানিনা কিন্তু সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছি। যেহেতু নবীণ লেখক সেহেতু ভুল হতে পারে তুলে ধরার মাঝে। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ করছি। আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। মনের অন্তস্থল থেকে শুভেচ্ছা ও ভালবাসা। ধন্যবাদ।

২১ এপ্রিল - ২০১৯ গল্প/কবিতা: ৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪